এসএসসি পরীক্ষায় পেয়েছে জিপিএ ফাইভ, লেখাপড়া চালাতে সহযোগিতা চায় দুই বোন

সংসারের একমাত্র উপার্জন’ক্ষম বাবা আশরাফুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরেই মানসি’ক ভারসাম্যহী’ন। নিজের বাড়িটুকু ছা’ড়া সহায়-সম্বল বলতে তেমন কিছু নেই। টিউশনি করে কোনোরকমে সংসা’র চালাচ্ছেন মা আসমা খাতুন।

 

তবু লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া থেকে পিছ’পা হয়নি কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ধুবইল গ্রামের যমজ বোন সামিয়া খাতুন ও সাদিয়া খাতুন। শত প্রতিকূ’লতা কা’টিয়ে বড় বোনের মতো তারাও এবারের এসএসসি পরীক্ষায় পেয়েছে জিপিএ-৫। যমজ বোনের এমন সাফল্যে খুশি পরিবার ও প্রতিবেশীরা।


আরও পড়ুন: মেট্রোরেলে ইন্টারচেঞ্জ কী এবং কোন কোন স্টেশনে হবে


দুই বোনের ভা’ষ্য, অনেক ক’ষ্ট করে পড়ালেখা করছি। শত প্রতিকূ’লতার ভেতরে এভাবে পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া দু’ষ্কর। মাঝেমধ্যে খরচ জো’গাতে না পেরে পড়ালেখা বন্ধই হয়ে যায় প্রায়। তবু হাল ছাড়িনি। মায়ের টিউশনিতে সংসারের খরচ মেটানো স’ম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই বাধ্য হয়ে নিজেরাই টিউ’শনি শুরু করি।

 

টিউশনি থেকে যে অর্থ পাই তাতে পড়ালেখার খরচ চলে কোনোমতে। শতক’ষ্টের মধ্যেও এমন ফলাফলে আমরা দারুণ খুশি। ভবিষ্যতে সামিয়া হতে চায় চি’কিৎসক। আর সাদিয়া হতে চায় প্র’শাসনের কর্মকর্তা। তবে তাদের এমন ফলাফলের পুরো কৃ’তিত্বটু’কু তাদের মা আসমা খাতুনকে দিতে চায় দুই বোন।

 

তারা বলে, মায়ের সদি’চ্ছা ছাড়া এমন ফলাফল কখনই সম্ভব ছিল না। তিনি ক’ষ্ট করে আমাদের পড়ালেখার সুযোগ করে দিয়েছেন। ভবিষ্যৎ অগ্রযা’ত্রার পথ অনেক বন্ধুর বলেও দাবি তাদের। তাদের মা আসমা খাতুন জানান, মেয়েরা বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সংসারে শুরু হয় আরও টা’নাপ’ড়েন। তিন মেয়ে, কোনো ছেলেসন্তান নেই।

 

বড় মেয়ে নির্জনা আক্তার পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছেন। অনেক ক’ষ্ট করে তাকে সেখানে ভর্তি করিয়েছেন। এমন সংক’টের মধ্যেও সামিয়া ও সাদিয়ার পড়ালেখা চলে। নিজেরা টিউশনি করে নিজেদের খরচ জোগাত তারা। মা বলেন, আজ আমাদের যমজ সন্তান ভালো ফলাফল করেছে। গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছে। সংসারে সংক’ট থাকলেও আজ কোনো সং’কট মনে হচ্ছে না।

 

আবে’গা’প্লুত হয়ে এভাবেই মেয়েদের এমন ফ’লাফলে নিজের অনুভূতি ব্য’ক্ত করেন তিনি। সামিয়া-সাদিয়ার এমন ফলাফলে খুশি প্রতিবেশীরাও। তাদের দাবি, সামিয়া-সাদিয়ার এমন ফলাফল তাদের কঠোর পরিশ্রমের ফসল। তাদের মতো অদম্য এসব মেধাবী শিক্ষার্থীর পাশে দাঁ’ড়ানোর কথা জানান অনেকেই।

 

মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল কাদের বলেন, সামিয়া-সাদিয়া স্থানীয়দের অনুপ্রে’রণা হতে পারে। কারণ অনেক প্রতিকূ’লতার ভেতর দিয়ে তারা এবারের এসএসসিতে যে সফলতা অ’র্জন করেছে তাতে নিঃস’ন্দেহে তারা প্র’শংসার দাবিদার।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin